সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য এবং সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া সাল্লাহ উপর। আদর্শ শিক্ষা মনুষ্যত্ব বিকাশের মাধ্যম। আত্মবিশ্বাস ও কোমল বৃত্তির পরিস্ফুটন এবং জীবনের সকল সমস্যা সমাধান ও উন্নয়নের দিক দর্শন। সুতরাং একটি শান্তিপূর্ণ উন্নয়নশীল সমাজের জন্যে যুগোপযোগী ইসলাম ভিত্তিক সুশিক্ষায় আত্মপ্রত্যয়ী আলোকিত মানুষের কোন বিকল্প নেই। যারা শোষণ দূর্নীতি কুসংস্কার ও অপসংস্কৃতি মুক্ত এবং মানবীয় গুণাবলীতে অলংকৃত হয়ে উন্নত দেশ ও জাতি গঠনে আত্মনিয়োগ করার মাঝেই উভয়কালীন সফলতা  অর্জনের সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবে। তাই এ মহান লক্ষ্যে ঈমানী চেতনাও সামাজিক দায়বদ্ধতার তাগিদে কতিপয় সচেতন জনহিতৈষী উদ্দ্যোগী দ্বীনদার ব্যক্তির মাধ্যমে আল্লাহর ইচ্ছায় গড়ে উঠে ইসলাম ও আধুনিকতার সমন্বিত ব্যতীক্রমধর্মী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান “মাদরাসাতুল হুদা আল-ইসলামিয়্যাহ আস-সালাফিয়্যাহ”।

আমরা মুসলিম হিসেবে সন্দেহাতীতভাবে বিশ্বাস করি যে, উভয়কালীন সুখ, শান্তি ও সফলতা লাভের একমাত্র পথ কুরআন ও সহীহ সূন্নাহর পরিপূর্ণ অনুসরণ। কিন্ত আল্লাহর রাসূল (সাঃ) থেকে দূরত্ব বৃদ্ধির সাথে সাথে বিভিন্ন বাতিল ফিরকা ও ফিৎনা বৃদ্ধির পাশাপাশি যোগ্য দ্বীনি আলেমের অপ্রতুলতার কারণে, বাতিল পন্থিদের কুরআন-সুন্নাহর অপব্যাখ্যা ও গলাবাজির কাছে সরলমনা সাধারণ মুসলমানগণ প্রতারিত ও পথভ্রষ্ট হচ্ছে। তাই আজ কুরআন, সুন্নাহ ও বিশুদ্ধ আকীদানয় দক্ষ ও হক্কানী আলেমের বড়ই প্রয়োজন। যারা নির্ভেজাল দ্বীনি জ্ঞানের আলো দিয়ে মানুষকে হিদায়াতের পথ দেখাবেন।

এ প্রয়োজন পূরণে প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আল্লাহর ইচ্ছায় কিছু একনিষ্ঠ মুসলিম ভাইয়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও আপনাদের আন্তরিক সহযোগীতায় ঠাকুরগাঁও জেলায় গড়ে ওঠে কুরআন, সহীহ সূন্নাহ ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় আলোকিত মানুষ তৈরির ব্যতিক্রমধর্মী প্রতিষ্ঠান, মাদরাসাতুল হুদা আল-ইসলামিয়্যাহ আস-সালাফিয়্যাহ। যা দক্ষ নিষ্ঠাবান শিক্ষকমন্ডলী এবং শিক্ষানুরাগী অভিজ্ঞ পরিচালনা কমিটির নিরলস প্রচেষ্টায় অতি অল্প সময়ের ব্যবধানে নূরানী, হিফয, আরবী ভাষা শিক্ষা কোর্সের সাথে কিতাব বিভাগের বালিকা শাখা নবম এবং বালক শাখা দ্বাদশ শ্রেণিতে উন্নিত হয়েছে। বর্তমান শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় এক হাজার। 


মাদরাসার ইতিহাসঃ 

উত্তরবঙ্গের ঠাকুরগাঁও জেলার বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন মোজাম্মেল হক মাদানী এহইয়াযুততুরাস এর দায়িত্বশীল হিসেবে অনেক মাসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন এবং নিজ এলাকায় একটি মাদরাসাও প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০২ সালে ডেবাডাঙ্গী বড় জামে মাসজিদের সভায় উপস্থিত হন এবং আশে পাশে জায়গা পাওয়া গেলে মাদরাসা করা যেতে পারে বলে আশ্বাস দেন। কোন এক সন্ধ্যায় আজিজুর রহমান গোয়াল পাড়ার আঃ সুবহান এর সাথে আলাপচারিতায় লিপ্ত হন। গল্পের নানা ফাঁকে উঠে আসে মাদরাসার জন্য জায়গার কথা। তৎক্ষনাৎ আঃ সুবহান দ্বীনি কাজে আগ্রহী আসিরুদ্দীন মুন্সির শরানাপন্ন হন। সেখানে শলা পরামর্শ করে সাথে নেন ইয়াদুর রহমান মাস্টারকে। ৩জনে সোমবার দিন ঠিক করে সাক্ষাৎ করেন শা্ মোজাম্মেল হক মাদানীর সাথে। তাঁরা তাকে জায়গার ব্যাপারে কিছুটা আসস্থ্যকরলে এর কয়েক দিন পরেই ডেবাডাঙ্গী স্কুল মাঠে একটি মিটিং এর আহ্বান করেন এবং তিনি নিজে উপস্থিত হয়ে তৎকালীন একাউন্টেড মরহুম আব্দুর রহীম সাহেবকে সভাপতি, ইয়াসিন আলী সরদারকে সেক্রেটারীর দায়িত্ব অর্পন করেন বাকিদের সদস্য পদ দেন। সদস্য পদে ছিলেন, ( আব্দুস সুবহান, আসিরুদ্দীন মুন্সি, ইয়াদুর মাস্টার, আনিসুর মাহালিয়া) এবং নামকরণ করেন মাদরাসাতুল হুদা। মিটিং শেষে মোজাম্মেল হক চেক তৈরীর দায়িত্ব নেন। পরবর্তীতে চেকের মাধ্যমে আঃ সুবহান ও ইয়াদুর রহমান মাস্টার ৩০,০০০ টাকা কালেকশন করেন। সেই টাকা দিয়েই সর্বপ্রথম ৭০,০০০ টাকা দরে জমির বায়না করা হয়। এভাবেই বিশাল স্বপ্ন বাস্তবায়নে হাটি হাটি পা পা করে চলছিল দ্বীনদরদী এই মানুষগুলির পদচারণা। এই মহৎ উদ্দেগ্য সামনে রেখে ডেবাডাঙ্গী স্কুল মাঠে মাহফিলের আয়োজন করা হয়। মাহফিলে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিল একজন অ্যারাবিয়ান শায়খ তরজমা করছিলেন আকরামুজ্জামান বিন আঃ সালাম। শাইখ আকরামুজ্জামানকেও জানানো হয় গ্রামবাসীর আকাশচুম্বী স্বপ্নের কথা। (উল্লেখ্য যে শাইখ আকরামুজ্জামান এহইয়াযুততুরাস  অফিসে কর্মরত ছিলেন) আর এহইয়াযুততুরাস এর দায়িত্বে ছিলেন একজন সুদানি শায়খ। অফিসে মাদরাসা মাসজিদের কাজে আসলে এখানকার কথা জানান আকরামুজ্জামান বিন আঃ সালাম। কিন্তু তাতে তিনি কর্ণপাত করেননি। এদিকে বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা ঠাকুরগাঁও জেলার কৃতি সন্তান ড. মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ খান মাদানী মিরপুর দারুস সুন্নাহ মাদরাসার অধ্যক্ষের দায়িত্বে কর্মরত ছিলেন। মাদরাসার কাজে তুরাস অফিসে যান। সেখানে শাইখ আকরামুজ্জামান তাকে সুদানি শায়খকে নিজ এলাকার প্রতিষ্ঠানের জন্য আবেদন করতে বলেন। আবেদন করলে সুদানি শায়খ গ্রহণ করেন। এবং জমির দলিল তলফ করেন। তখন শহীদুল্লাহ খান মাদানী তার বড় ভাই ফজলে কাদের খানকে বিষয়টি অবহিত করেন। তিনি তখন কমিটিদের বিষয়টি জানান। কমিটি দলিল নিয়ে মোজ্জাম্মেল হক মাদানীকে দেন। তিনি সেই কাগজগুলো ঢাকা অফিস পর্যন্ত পৌঁছে দেন। বাজেটে পাশ হলে মনোয়ার নামক ইঞ্জিনিয়ার সরজমিনে পরিদর্শন করেন এবং তার তত্বাবধানে চাপাই নবাবগঞ্জের আঃ সামাদ মিস্ত্রির মাধ্যমে ২০০২ সালের শুভক্ষণে মোজাম্মেল হক মাদানীর উদ্ভোধনে মাসজিদের কাজ শুরু হয়। এরপর চার কক্ষ বিশিষ্ট একতলা ভবন একটি অযুখানা একটি লাশ ধোয়া ঘর ও ৩টি দোকান ঘরের কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার মাধ্যমে অত্র প্রতিষ্ঠানটি দ্বীনের দায়ী তৈরি করতে পথ চলা শুরু করে।


অবকাঠামোঃ

আমাদের মাদ্রাসার আয়তন প্রায় ৩ একর। এটি ঠাকুরগাঁও-বালিয়াডাঙ্গি সড়ক সংলগ্ন দক্ষিণ পাশে অবস্থিত। প্রতিষ্ঠানের পূর্বে রয়েছে একটি ৫তলা ভবন যেখানে আবাসিক ও পাঠদানের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতি ফ্লোরে ছাত্রদের সঠিক দিক নির্দেশনা দেওয়ার জন্য ২জন করে শিক্ষক নিয়োজিত থাকেন। দক্ষিণে রয়েছে প্রশাসনিক ভবন। পশ্চিম ও উত্তরে রয়েছে হিফজ বিভাগ ও মসজিদ এবং তথ্য কেন্দ্র। আত্ম উন্নয়নের জন্য আমাদের রয়েছে লাইব্রেরী। শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা বৃদ্ধি ও উপস্থাপনের জন্য রয়েছে “ইসলাহুল বায়ান”। 


মাদরাসার বৈশিষ্ট্যঃ 

  • হাইরোড সংলগ্ন সবুজ, শ্যামল উন্মুক্ত ও মনোরম পরিবেশে মাদরাসাটি অবস্থিত। 

  • কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর আলোকে বিশুদ্ধ আকীদাহ ভিত্তিক নতুন ধারার শিক্ষা ব্যবস্থা। 

  • ছাত্রদের মেধার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ দ্বীনি ও আধুনিক শিক্ষার সমন্বিত উন্নত পাঠ্য সূচীর ভিত্তিতে পাঠ দান। 

  • সর্বোচ্চ সংখ্যক ক্লাশ গ্রহণ এবং আরবী, বাংলা, ইংরেজি ও গণিত লিখা-পড়া ও কথোপকথনে বিশেষ গুরুত্বারোপ। 

  • ছাত্রদের জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধির লক্ষ্যে অবসর সময়ে ব্যক্তিগত অধ্যয়নের জন্য পাঠাগার ও কম্পিউটার শিক্ষার সু-ব্যবস্থা। 

  • ছাত্রদের প্রতিভা বিকাশ ও বাহ্যিক যোগ্যতা অর্জনে নিয়মিত সাপ্তাহিক ইসলামী মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা। 

  • উচ্চ ডিগ্রীধারি যোগ্য, অভিজ্ঞ ও আন্তরিক শিক্ষক মন্ডলীর দ্বারা পাঠদান।

  • শ্রেনিতে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অধিকারী ছাত্রকে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান।

  • শিক্ষক মন্ডলীর সার্বক্ষনিক উপস্থিতিতে আবাসিক ছাত্রদের সার্বিক তত্বাবধায়নের ব্যবস্থা। 

  • সি সি ক্যামেরার মাধ্যমে প্রতিঠানের সার্বিক বিষয় তত্বাবধানের ব্যবস্থা।

  • মাদরাসার প্রাত্যহিক রুটিনের ভিত্তিতে দৈনিক ২৪ ঘন্টা কাজে লাগিয়ে উপকার সাধনের সু-ব্যবস্থা রয়েছে। 

  •  ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মদিনা, সাউদি আরব এর সাথে মুয়াদালা (নিবন্ধন) কৃত প্রতিষ্ঠান। 


মাদরাসার নিয়মাবলীঃ 

# মাদরাসা ক্লাশ চলাকালীন সময়ে ও মাদরসার সকল অনুষ্ঠানে মাদরাসার পোশাক ব্যবহার বাধ্যতামূলক। 

# প্রতি মাসের বোডিং ফি মাস শুরুর পূর্বে, মাসিক বেতন ১-১০ তারিখের মধ্যে বেতন ও অন্যান্য ফি সমূহ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।

# ছুটি বিহীন পূর্ণ একমাস অনুপস্থিত থাকলে অথবা তিন বা ততোধিকবার ছুটি ব্যতিত মাদরাসা ত্যাগ করলে ভর্তি বাতিল বলে গণ্য হবে। 

# নিম্ন বর্ণিত অপরাধের কারণে টি.সি. প্রদান করা হবে।  

* সরকার বা মাদরাসা কর্তৃক নিষিদ্ধ কোন দল বা সংস্থার সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকলে। 

* বার্ষিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে। 

* শিক্ষক মহোদয়ের সাথে বেআদবী মূলক আচরণ করলে অথবা মাদরাসার কোন নিয়ম ভঙ্গ করা অভ্যাসে পরিণত হলে। 


# নির্ধারিত তারিখে বেতন ও অন্যান্য পাওনাদি পরিশোধ করতে হবে। 

# মাদরাসার স্বার্থে যে কোন নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে। 

# প্রতিষ্ঠানের কোন সম্পদ নষ্ট হলে তার পূর্ণ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। 

# ক্লাশ, পরীক্ষা, প্রাত্যহিক রুটিন অশোভনীয় আচরণ ইত্যাদি যে কোন বিষয়ের নিয়ম লঙ্গন করলে সে ব্যপারে নির্ধারিত বিধান অনুযায়ী তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

# যে কোন বিষয়ে মাদরাসার সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।



পাঠ্যক্রম সংক্রান্ত তথ্যাবলীঃ

নূরানী বিভাগ : এ বিভাগে ১বছরে ক্বায়দা, তাজবীদ সহ কুরআন মাজিদ শিক্ষা, সূরা যুহা থেকে সূরা নাস পর্যন্ত (২২টি) সূরা, আল্লাহর নাম, নিত্য প্রয়োজনীয় মাসায়েল, মাসনূন দু’আ মুখস্ত ও আদব শিক্ষা ও আরবি হাতের লেখা শেখানো হয়। 

হিফয বিভাগ : তাজভীদ সহ তারতীলের সাথে তিন থেকে চার বছরের মধ্যে পূর্ণ কোরআন হিফয করা। তবে মেধা অনুসারে সময় কম ও বেশী লাগতে পারে। 

আরবী ভাষা শিক্ষা কোর্সঃ যে সমস্ত ছাত্র বাংলা, ইংরেজি ও গনিতে ভালো হওয়া সত্বেও আরবি না জানার কারণে এ প্রতিষ্ঠানে পড়া লেখার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তাদের আরবিতে পারদর্শী করে মাদ্রাসায় পড়ার উপযোগী করে তোলার লক্ষ্যে এক বছর মেয়াদী আরবী ভাষা শিক্ষা কোর্সের সু-ব্যবস্থা রয়েছে।

কিতাব বিভাগ : মাদরাসার নিজস্ব পাঠ্যতালিকা অনুযায়ী শিশু থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। যা কুরআন, হাদীস, তাওহীদ, ফিকহ, আরবী সাহিত্য, নাহু, সরফ, উসূলে হাদীস, উসূলে ফিকহ, সাধারণ জ্ঞান এবং বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডেও পাঠ্যপুস্তকের বাংলা, ইংরেজী, গণিত, সমাজ ও বিজ্ঞান উক্ত পাঠ্য তালিকার অর্ন্তভুক্ত। 

বালিকা শাখাঃ ইসলামিক পরিবার ও সমাজ বিনির্মাণে পুরুষের পাশাপাশি নারীর ভূমিকা অপরিসীম। তাই কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর আলোকে যোগ্য মা তৈরীর লক্ষ্যে সম্পূর্ন ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক অভিজ্ঞ শিক্ষিকা দ্বারা এ শাখায় শিশু থেক অষ্ঠম শ্রেণি পর্যন্ত অনাবাসিক ভাবে পাঠদানের ব্যবস্থা রয়েছে।




পাঠদান ও পরীক্ষা পদ্ধতিঃ

পাঠদান পদ্ধতি : দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষক মন্ডলীর দ্বারা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সহজ উপায়ে সুনির্দিষ্ট একাডেমিক পরিকল্পনা মোতাবেক পাঠদান করা হয়।  

পরীক্ষা পদ্ধতি: শিক্ষাবর্ষকে দুই সেমিষ্টারে বিভক্ত করে পাঠদান করা হয় এবং পরীক্ষা নেয়া হয়।

  • শিশু থেকে ৩য় শ্রেণি পর্যন্ত প্রতি ১৫ দিন অন্তর এবং ৪র্থ  ও তদুর্ধ্ব শ্রেনির জন্য ১ মাস অন্তর শ্রেণি পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।

  • বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্ন পত্রে ১ম সেমিস্টারের সিলেবাস থেকে ২০নম্বরের প্রশ্ন এবং বাকি প্রশ্ন ২য় সেমিস্টারের সিলেবাস থেকে তৈরী করা হয়।

ফলাফল তৈরী পদ্ধতিঃ বার্ষিক ফলাফল তৈরীতে অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ৩০% এবং বার্ষিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ৭০% নম্বরের সমন্বয়ে বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল তৈরী করা হয়।




ক্লাসের সময়সূচী

হিফয বিভাগ :

(ক) ফজরের আযানের ১ ঘণ্টা পূর্ব হতে আযান পর্যন্ত পড়া।

(খ) বাদ ফজর হতে সকালের নাস্তা পর্যন্ত।

(গ) সকাল ৮টা হতে সকাল ৯:৩০টা পর্যন্ত পড়া। 

(ঘ) এরপর গোসল ও বিশ্রাম (ঘুম) দুপুর ১২টা পর্যন্ত।

(ঙ) দুপুর ১২ টা থেকে যোহরের ছালাতের পূর্ব পর্যন্ত আমুখতা ক্লাস।

(চ) দুপুরের খাওয়ার পর হতে আছরের পূর্ব পর্যন্ত আমুখতা ক্লাস। 

(ছ) বাদ আছর হতে খেলাধূলার সময়ের পূর্ব পর্যন্ত অডিও-ভিডিও ক্লাস।

(ঞ) বাদ মাগরিব হতে এশা পর্যন্ত ক্লাস (সবক)। 

(ট) রাতের খাওয়ার পর ১০টার মধ্যে ঘুমাতে যাওয়া।


কিতাব বিভাগ :

(ক) সকাল ৮টা হতে দুপুর ১২:৩০টা পর্যন্ত।

(খ) অতিরিক্ত ক্লাস (ছোটদের কুরআন ও তাজভীদ শিক্ষা এবং বড়দের ইংরেজি ও আরবী কথোপকথন) বাদ আছর হতে খেলাধূলার সময়ের/মাগরিব আযানের ৪৫ মিনিট পূর্ব পর্যন্ত। 



পরিক্ষার নিয়মাবলীঃ

১। পরীক্ষা শুরুর ২০ দিন আগে প্রতি শিক্ষক কম্পোজ করা প্রশ্ন জমা দিবেন।

২। পরীক্ষার দায়িত্বশীল রুটিন দেখে সব প্রশ্ন বুঝে নিবেন যেন রুটিনে উল্লেখিত কোন বিষয় বাদ না পড়ে।

৩। প্রশ্নপত্র জমা নেয়া,ফটোকপি করা অথবা সংরক্ষণের ক্ষেত্রে কন্ট্রোলার সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করবেন।

৪। প্রশ্নপত্র জমা দেয়ার সময় সাবজেক্ট ওয়ারী চার্টে জমা দাতা স্বাক্ষর করবেন।

৫। নিজ বিষয়ের অথবা অন্য শিক্ষককের কোন প্রশ্ন টিউশনির ছাত্র, নিজ আত্মীয় বা অন্য কাউকে জানানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

৬। পরীক্ষা শুরুর নূন্যতম ২ দিন পূর্বেই পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পরীক্ষার সার্বিক প্রস্তুতি (প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র ক্রয়) সীট প্লান তৈরী ও পরীক্ষায় দায়িত্বরত শিক্ষকগণের দায়িত্ব বন্টন করবেন।

৭। পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরীতে অবশ্যই সিলেবাসে উল্লেখিত মানবণ্টন অনুযায়ী এবং সিলেবাসের নির্ধারিত অংশ থেকে প্রশ্ন তৈরী করতে হবে।

৮। প্রশ্ন পত্রে অব্যশই মান বন্টন উল্লেখ করতে হবে।

৯। পরীক্ষা শুরুর ১০ দিন আগেই পরীক্ষার রুটিন ও পরীক্ষার নোটিশ প্রকাশ করতে হবে। উক্ত নোটিশে পরীক্ষা শুরুর ৫ দিন পূর্বেই পরীক্ষার ফি সহ জাবতীয় বকেয়া পরিশোধের কথা উল্লেখ থাকবে।

১০। অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার ৩০% নম্বর এবং বার্ষিক পরীক্ষার ৭০% নম্বর দিয়ে ফাইনাল রেজাল্ট তৈরী হবে।

১১। কোন নম্বর পত্রে নম্বর লিখার জন্যে মাদরাসার বাইরে নেয়া যাবে না।

১২। ফলাফল প্রকাশের ৫দিন পূর্বে পরীক্ষার নম্বর কন্ট্রোলারের কাছে জমা দিতে হবে।

১৩। পরীক্ষার খাতা কাটা বা নম্বর যোগ করা ইত্যাদিতে কোন ছাত্র বা অন্য কারো সহযোগীতা নেয়া যাবে না।

১৪। পরীক্ষার রুটিন হলেই যে যে তারিখে বাসের যাত্রীর পরীক্ষা আছে, সে তারিখ ওয়ারী ছাত্র সংখ্যা উল্লেখ পূর্বক তালিকা বাসের দায়িত্বশীলকে দিতে হবে।

১৫। পরীক্ষার মাঝে সরকারী ছুটি ছাড়া কোন দিন পরীক্ষা বন্ধ রাখা যাবে না।

১৬। পরীক্ষার দায়িত্বরত কোন শিক্ষক পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে অনুপস্থিত থাকতে অথবা অন্য কাজে ব্যস্ত হতে পারবে না।

১৭। পূর্বে ঘোষিত না এমন কোন নিয়ম পরীক্ষার হলে হঠাৎ জারি করা ও মারপিট করা যাবে না।  

১৮। কন্ট্রোলার গার্ড না নিয়ে পরীক্ষা পরিদর্শন করবেন। কম্পিউটারের দায়িত্বশীল কম্পিউটারের কাজের জন্য থাকবেন আর অন্যান্য উস্তাদগণ এমন কি কন্ট্রোলারের সহযোগীও বিশেষ প্রয়োজনে গার্ড দিবেন।

১৯। পরীক্ষার দায়িত্ব প্রাপ্ত কাউকে  ছুটি দেওয়া হবে না। বিশেষ প্রয়োজনের পরিবর্তে লোক দিয়ে অধ্যক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে ছুটি নিতে হবে।

২০। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে দায়িত্বরত শিক্ষক নিজ রুম ছাড়া কন্ট্রোলারের অনুমতি ব্যতিত অন্য কোন রুমে যেতে পারবেনা

২১। প্রত্যেক শ্রেণী শিক্ষককে পরীক্ষার ফি আদায় করতে হবে।

২২। প্রত্যেক শ্রেণি শিক্ষককে নিজ দায়িত্বে নির্ধারিত সময়ে নম্বর পত্রে নম্বর লিখে পরীক্ষার খাতা ও নম্বর কন্ট্রোলারের নিকট জমা দিতে হবে।


২৩। খাতা কাটার সময় পূর্ণ সতর্কতা ও ইনসাফের সাথে শান্ত ভাবে খাতা কাটতে হবে, যেন কোন শিক্ষার্থীর উপরে অবিচার না হয়।

২৪। কথোপকথন মূলক মৌখিক পরীক্ষার জন্যে বইয়ের পূর্ণ অংশ থেকে উক্ত বিষয়ের শিক্ষক বইয়ে উল্লেখ নেই এমন প্রায় ১০০ টি প্রশ্ন তৈরী করে কন্ট্রোলারের কাছে জমা দিবেন। উক্ত পরীক্ষায় আরো একজন উস্তাদ থাকবেন এবং তিনিই নম্বর দিবেন।

২৫। পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পূর্বে কাউকে ফলাফল বা কোন বিষয়ের নম্বর জানানো যাবে না।

২৬। পরীক্ষার খাতা জমা দেয়ার সময় জমা দাতা নির্ধারিত ফরমে স্বাক্ষর করবেন।

২৭। যে সমস্ত কাজের জন্য সময় নির্ধারিত থাকবে, সেগুলো নির্দিষ্ট সময়েই সম্পাদন করতে হবে। যেমন প্রশ্ন জমা দেয়া ও নম্বর পত্র লিখা ইত্যাদি।

২৮। পরীক্ষা চলাকালীন সময় কোন দায়িত¦শীলের জন্যে মোবাইল ব্যবহার, কারো সাথে গল্প বা দায়িত্বের বাইরে অন্য কোন কাজে ব্যস্ত হওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

২৯। পরীক্ষার হলে অসৎ উপায় অবলম্বন করলে তার পরীক্ষা বাতিল করা হবে বহিষ্কার হওয়ার পর আর কোন পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারবে না।

৩০। নৈবিত্তিক অংশ প্রথমে দিয়ে নির্ধারিত সময়ে জমা নিতে হবে।

৩১। প্রত্যেক শিক্ষকের জন্য উল্লেখিত নিয়মাবলী অনুসরন অপরিহার্য। কারো মাঝে তা পালোনে শৈথিল্যতা পরিলক্ষিত হলে,তাকে জবাবদিহীতার মুখোমুখি হতে হবে।


শিক্ষার্থীদের করণীয়ঃ  

১। পরীক্ষা শুরুর ১৫ মিনিটি পূর্বে পরীক্ষার হলে উপস্থিত হতে হবে ।

২। মাদরাসার পোশাক পরিধান করে পরীক্ষার হলে উপস্থিত হতে হবে।

৩। প্রবেশ পত্র ছাড়া পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে দেওয়া হবে না ।

৪। জ্যামিতি বক্র, হার্ডবোর্ড, কলম, পেন্সিল ও পরীক্ষার জন্য আবশ্য প্রয়োজনীয় উপকরণ ছাড়া অন্য কোন কিছু সাথে নেওয়া যাবে না।

৫। পরীক্ষা চলা কালীন সময়ে অন্য ছাত্রের সাথে কথা বলা বা অন্যের দেখে লিখা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কেউ প্রথম বার এমন করলে ১৫ মিনিটের জন্য খাতা আটকে রাখা হবে, ২য় বার এমন করলে ২০ মিনিটি ও ৩য় বার করলে খাতা দেওয়া হবে না।

৬। পরীক্ষার হলে অসদুপায় অবলম্বন করলে তার পরীক্ষা বাতিল করা হবে

৭। পরীক্ষার শেষ হওয়া ১৫ মিনিট পূর্ব পর্যন্ত অতিরিক্ত উত্তর পত্র নেওয়া যাবে ।

৮। বহুনির্বাচনী পরীক্ষার উত্তর পত্র আলাদা দেওয়া হবে।

৯। নৈবিত্তিক অংশ প্রথমে দেওয়া হবে ও নির্ধারিত সময়ে জমা নেওয়া হবে।

১০। নির্দিষ্ট ঘন্টা অনুযায়ী খাতা জমা নেওয়া হবে ।

১১। পরীক্ষার সময় নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে মাদরাসা কর্তৃক বাজানো বেল চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।  

১২। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে শিক্ষকের সাথে বেআদবী করলে পরীক্ষা বাতিল করা হবে।

১৩। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে অতিরিক্ত উত্তর পত্র ইত্যাদির প্রয়োজন হলে নিজ জায়গা থেকে হাত তুলে ইশারার মাধ্যমে নিতে হবে ।

১৪। পরীক্ষার সময় উচ্চস্বরে কথা বলা বা হাসাহাসি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

১৫। শুধু মাত্র ৭ম শ্রেণির উপরের ছাত্ররা ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে।

 

পইন্ট টেবিলঃ

নম্বরের ব্যবধান

লেটার গ্রেড

পয়েন্ট

৮০-১০০

এ+

৭০-৭৯

৬০-৬৯

এ-

৩.৫

৫০-৫৯

বি

৪০-৪৯

সি

৩৩-৩৯

ডি

০০-৩২

এফ




ভর্তি নির্দেশিকাঃ

ক) প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়। ভর্তি ফর্ম এখন ঘরে বসেই অনলাইনে পুরণ করা যায়। 

খ) মাদরাসার ঘোষিত তারিখে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। 

গ) প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত এবং আরবি কর্সে লিখিত ও মৌখিক। শিশু শ্রেণি, নূরানী ও হিফয বিভাগে শুধু মৌখিক ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। 

ঘ) লিখিত ও ম্যেখিক পরীক্ষায় আলাদা আলাদা ভাবে পাশ করতে হবে। 

ঙ) ছাত্রের বয়স ও উ্চ্চতা আবেদনকৃত শ্রেণির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে। 

চ) কৃতকার্য ছাত্র বা ছাত্রীদের নির্ধারিত সময়ে ভর্তি হতে হবে। নচেৎ সে স্থানে অন্য ছাত্রকে ভর্তি নেওয়া হবে। 

ছ) অনাবাসিক ভাবে ছাত্রী ভর্তি নেয়া হয়।

জ) নির্ধারিত তারিখের মধ্যে জন্ম সনদ অনুযায়ী নির্ভুল ভাবে ভর্তি ফরম পূরণ করে ২কপি স্ট্যাম্প সাইজের রঙ্গিন ছবি সহ জমা দিয়ে পরীক্ষার প্রবেশ পত্র গ্রহণ করতে হবে।

ঝ) ভর্তির সময় জন্ম নিবন্ধন এর ফটোকপি, নাগরিকত্বের সনদপত্র ও পূর্বের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের TC, দুই কপি রঙিন ছবি এবং অভিভাবকের পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি, এনআইডি কার্ডের ফটোকপি, নাগরিকত্বের সনদপত্র ও নির্ধারিত ফি সমূহ জমা দিতে হবে। 


মাদরাসার পোশাক:

ক. ছাত্রদের জন্য হালকা আকাশী রঙের পায়জামা পাঞ্জাবী, সাদা সূতার টুপি ও ক্যাটস। 

খ. শিশু শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীদের জন্য সাদ্দা সালোয়ার, স্কার্ফ, কমরের বেল্ট অ হাল্কা আকাশী রঙের কামিজ এবং তৃতীয় ও তদুর্ধ্ব শ্রেণির ছাত্রীর জন্য কালো রঙের স্টেপ বোরকা।




 

অনাবাসিক শিক্ষার্থীর অবশ্য পালনীয়

১. মাদরাসা দিক নিদের্শনা অনুযায়ী পড়া-লেখা করতে হবে।

২. আযান হলে যাবতীয় কাজ ও কথা বাদ দিয়ে সালাতের পূর্ণ প্রস্তুতি সহ মাসজিদে গিয়ে সুন্নাহ, ফরয অতঃপর মাসনুন আযকার ও সুন্নাহ সালাত যথাযথভাবে আদায় করতে হবে।

৩. উস্তাদ, কর্মচারী ও বড়দের সাথে নম্র ও ভদ্রতা মূলক আচরণ করতে হবে। কখনো পরস্পরে ঝগড়া ও মারামারি  করা যাবে না।

৪. অনুমতি ছাড়া অন্যের জিনিস গ্রহণ অথবা ব্যবহার করা যাবে না।

৫. মোবাইল সহ যাবতীয় বাদ্য যন্ত্র কাছে রাখা শিক্ষার্থীর জন্য সম্পূর্ন নিষিদ্ধ। কোন শিক্ষার্থীর কাছে এমন কিছু পাওয়া গেলে তা আর ফেরত দেয়া হবে না।

৬. বিরতির সময় ছাড়া অন্য কোন সময়ে খেলাধুলা করা যাবে না।

৭. দাড়ি কাটা, মুন্ডন করা, গোড়ালির নিচে পোশাক পরা এবং আটো-সাটো ও কুরুচীপূর্ণ পোশাক পরিধান করা নিষিদ্ধ।

৮. প্রতি মাসের বেতন সে মাসের এক থেকে দশ তারিখের মধ্যে এবং অন্যান্য ফি নির্ধারিত সময়ে প্রদান করতে হবে।

৯. ভর্তি ফরমের  সকল শর্তাবলী মেনে চলতে হবে।

১০. কখনো মাদরাসার নিয়ম পরিপন্থী কোন অনুরোধ ও আবেদন করা যাবে না।

১১. সব সময় বিশুদ্ধ ও মার্জিত ভাষায় কথা বলতে হবে এবং উত্তম চরিত্রের অধিকারী হতে হবে। কেউ দূর্ব্যবহার করলে নিজে এর প্রতি উত্তর না করে কর্তব্যরত উস্তাদকে অবহিত করতে  হবে।

১২. কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কাউকে মাদরাসায় প্রবেশ করানো এবং নিজেদের মাঝে কোন কিছু ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে না।

১৩. মাদরাসায় আসার সময়, ক্লাসের সময় ও অনুষ্ঠানের সময় মাদরাসার পোশাক ও আই. ডি. কার্ড ব্যবহার বাধ্যতামূলক।

১৪. ছুটি বিহীন অনুপস্থিত হলে প্রথম ১ দিনের জন্য ৫০/= টাকা এবং পরবর্তী প্রতিদিনের জন্য ৩০/= টাকা হারে জরিমানা দিতে হবে।

১৫. অসুস্থতা, গুরুতর সমস্যা ও পারিবারিক অনাকাঙ্খিত দূর্ঘটনা ইত্যাদি কারণে নির্ধারিত সময়ে ক্লাসে উপস্থিত অসম্ভব মনে হলে অভিভাক ফোনে শ্রেণি শিক্ষককে জানাবেন। অত:পর মাদরাসা এসেই অধ্যক্ষ বরাবর শ্রেণি শিক্ষকের স্বাক্ষর সম্বলিত আবেদনের মাধ্যমে ছুটি নিতে হবে। নচেৎ জরিমানা হবে।

১৬. একাধিক বার ছুটিবিহীন অনুপস্থিত হলে শিক্ষার্থীর সাথে অভিভাবককে উপস্থিত হয়ে কারণ দর্শাতে হবে।

১৭. শরীর, পোশাক-পরিচ্ছদ ও দাঁত সব সময় পরিষ্কার এবং চুল ও নখ ছোট রাখতে হবে।

১৮. কাগজ, উচ্ছিষ্ট ও ময়লা-আবর্জনা যেখানে সেখানে না ফেলে বারান্দা বা ক্লাস রুমে রাখা ঝুড়ি অথবা আবর্জনা ফেলার নির্ধারিত জায়গায় ফেলতে হবে।

১৯. প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও টিউশন ফি প্রদান করতে হবে।

২০. ছুটি ছাড়া ১৫ দিনের অধিক সময় অনুপস্থিত থাকলে ভর্তি বাতিল বলে গণ্য হবে।

২১. মাদরাসার কোন জিনিস নষ্ট করলে তার ক্ষতি পূরণ দিতে হবে।

২২. রাষ্ট্রবিরোধী যেকোন কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ততা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

২৩. নিম্ন বর্ণিত অপরাধের কারণে পূর্ব নোটিশ ছাড়াই টি.সি প্রদান করা হয়, তাই এ ধরনের কাজ থেকে সবসময় দূরে থাকতে হবে।

  • এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা জীবনে মাদরাসা স্বার্থ বিরোধী কোন অপ-তৎপরতা অথবা কোন সংগঠনের সাথে কোন রকম সম্পর্ক রাখলে।

  • ছুটিবিহীন অনুপস্থিতি অভ্যাসে পরিণত হলে।

  • বার্ষিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে।

  • পরীক্ষায় অসুদুপায় অবলম্বন করলে। 

  • শিক্ষক মহোদয়ের সাথে বেআদবী করলে।

  • মাদরসার কোন নিয়ম একাধিকবার ভঙ্গ করলে। 

  • পরস্পর মারামারি, চুরি ও অসামাজিক কাজের সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হলে।


২৪. মাদরাসার স্বার্থে যে কোন নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে।

২৫. যে কোন বিষয়ে মাদরাসার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।

 


আবাসিক শর্তাবলী

১. এ প্রতিষ্ঠানে আসার মূল উদ্দেশ্য পড়া-লেখা। তাই সব সময় পড়া-লেখাতে ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে।

২. পরিপূর্ণ ভাবে প্রাত্যহিক রুটিনের অনুসরণ করতে হবে। অহেতুক অন্যরুম, পাকঘর অথবা এখানে সেখানে ঘুরা ফিরা ও গল্প করে সময় নষ্ট করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

৩. আযান হলেই সবধরনের কাজ ও কথা বাদ দিয়ে সালাতের পূর্ণ প্রস্তুতি সহ মাসজিদে গিয়ে সুন্নাহ, ফরয অতঃপর মাসনুন আযকার ও সুন্নাহ সালাত যথাযথভাবে আদায় করতে হবে।

৪. উস্তাদ, কর্মচারী ও বড়দের সাথে নম্র ও ভদ্র আচরণ করতে হবে। কখনো পরস্পরে ঝগড়া ও মারামারি  করা যাবে না।

৫. অনুমতি ছাড়া অন্যের জিনিস গ্রহণ অথবা ব্যবহার করা যাবে না।

৬. মোবাইল সহ যে কোন বাদ্য যন্ত্র ব্যবহার করা অথবা কাছে রাখা যাবে না। কারো কাছে এমন কিছু পাওয়া গেলে তা ফেরত দেয়া হবে না, উপরন্ত তাকে জরিমানা ও শাস্তির আওতায় আনা হবে।

৭. খেলাধুলার নির্ধারিত সময় ও স্থান ব্যতীত অন্য সময় ও স্থানে খেলা-ধুলা নিষিদ্ধ।

৮. ছাত্রদের দাড়ি কাটা বা মুন্ডন করা, গোড়ালির নিচে পোশাক পরা, সেন্ডোগেঞ্জি, শার্ট, রঙ্গিঁন প্যান্ট,আটো-সাটো ও কুরুচীপূর্ণ পোশাক সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

৯. প্রতি মাসের বোডিং ফি মাস শুরু পূর্বে, মাসিক বেতন সে মাসের এক থেকে দশ তারিখের মধ্যে এবং অন্যান্য ফি নির্ধারিত সময়ে প্রদান করতে হবে।

১০. এ ফরম ও ভর্তি ফরমের শর্তাবলী এবং আবাসিক নিয়মাবলী প্রত্যেক আবাসিক ছাত্রের মেনে চলা আবশ্যক।

১১. প্রত্যেক আবাসিক ছাত্রের সাথে অভিভাবক শুধুমাত্র মাসের ১ম ও ৩য় শুক্রবার সকাল ৮ টা থেকে ১১ টা এবং বেলা ২ টা থেকে বিকাল ৫টার মধ্যে সাক্ষাৎ করতে পারবেন।

১২. প্রত্যেক অভিভাবককে ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি, নাগরিকত্বের সনদপত্র, তিন কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙ্গিন ছবি এবং ১টি মোবাইল নম্বর মাদরাসায় জমা দিতে হবে। (বিশেষ প্রয়োজনে উক্ত নম্বর দিয়ে নির্ধারিত সময়ে ছাত্রদের জন্যে ব্যবহৃত নম্বরে ফোনে যোগাযোগ করতে পারবেন)।

১৩. নিজ পরিবারের কারো মৃতুজনিত কারণ ছাড়া সপ্তাহের মাঝে বা যখন-তখন ছুটি নেয়া যাবে না।

১৪. নতুন আবাসিক ছাত্রকে প্রথম মাসে বৃহস্পতিবার সালাতুয যোহর থেকে শুক্রবার মাগরিব পর্যন্ত (প্রায় ২৮ ঘন্টা), দ্বিতীয় বার ১৫ দিন পর বৃহস্পতিবার পূর্বের ন্যায় অতঃপর এক মাস পর পর বৃহস্পতিবার উল্লেখিত পন্থায় ছুটি দেয়া হবে। তাই সন্তানকে কোন অনুষ্ঠানে নিতে  চাইলে উপরোক্ত পন্থা খেয়াল রেখে অনুষ্ঠানের দিন ধার্য্য করতে হবে।

১৫.  রাষ্ট্র বিরোধী কোন সংগঠনের সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্পর্ক রাখা চলবে না।

১৬. কখনো মাদরাসার নিয়ম পরিপন্থী কোন আবেদন বা অনুরোধ করা যাবে না।

১৭. প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও টিউশন ফি প্রদান করতে হবে।

১৮. মাদরাসার কোন জিনিস নষ্ট করলে তার ক্ষতি পূরণ দিতে হবে।

১৯. কখনো কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই মাদরাসা ত্যাগ করতে চাইলে, মাদরাসা থাকাকালীন গৃহীত সুবিধার পূর্ণ মূল্য প্রদান করা বাধ্যতা মূলক।

২০. নিম্ন বর্ণিত অপরাধের কারণে পূর্ব নোটিশ ছাড়াই টি.সি প্রদান করা হয়, তাই এ ধরনের কাজ থেকে সবসময় দূরে থাকতে হবে।


  • এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা জীবনে মাদরাসা স্বার্থ বিরোধী কোন অপ-তৎপরতা অথবা কোন সংগঠনের সাথে কোন রকম সম্পর্ক রাখলে।

  • ছুটিবিহীন অনুপস্থিতি অভ্যাসে পরিণত হলে।

  • বার্ষিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে।

  • পরীক্ষায় অসুদুপায় অবলম্বন করলে। 

  • শিক্ষক মহোদয়ের সাথে বেআদবী করলে।

  • মাদরসার কোন নিয়ম একাধিকবার ভঙ্গ করলে। 

  • পরস্পর মারামারি, চুরি ও অসামাজিক কাজের সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হলে।

  •  ছুটি ছাড়া মাদরাসা সীমানার বাইরে যাওয়া অভ্যাসে পরিণত হলে।

 

২১. কোন শর্ত ভঙ্গের অপরাধে আবাসিকতা অথবা মাদরাসা থেকে বহিষ্কার হলে কোন প্রকার আপত্তি গ্রহণ যোগ্য হবে না।



ইসলাহুল বায়ানঃ প্রতি সপ্তাহে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা বৃদ্ধি ও উপস্থাপনের জন্য বক্তব্য প্রশিক্ষণের এর ব্যবস্থা রয়েছে এবং এটি প্রতিষ্ঠানের আবশ্যিক ক্লাস হিসাবে গণ্য হয়ে থাকে। এই প্রশিক্ষণে বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রতিটি শিক্ষার্থীকে পর্যায়ক্রমে বাংলা, ইংরেজি ও আরবীতে বাধ্যতামূলকভাবে বক্তব্য দিতে হবে। এসব বক্তব্যের উপর নম্বর থাকে, যা পরীক্ষা করে বক্তব্যের মান অনুযায়ী নম্বর প্রদান করা হয় ও ফলাফল প্রদান করে পুরস্কৃত করা হয়। এসব বক্তব্য প্রশিক্ষণ ক্লাসে কোনো শিক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকলে সে কোন নম্বর পাবে না। প্রতি বছরের শেষে যারা ভালো করে, তাদের দিয়ে “যৌথ ইসলাহুল বায়ান” এর মত বড় মঞ্চে পার্ফরম করার সুযোগ দেওয়া হয়। 



খেলাধুলা

একগুঁয়েমি ও অবসাদ দূরকরে আত্মিক প্রফুল্লতা ও সু-সাস্থ্যের লক্ষ্যে প্রতিদিন বিকালে ৪০-৬০ মিনিট শরীরচর্চা মূলক খেলাধুলার সুযোগ দেয়া হয়। এজন্যে রয়েছে মাদরাসার নিজস্ব সুবিস্তৃত মাঠ। শিশুদের জন্যেও টিফিনের সময় খেলাধুলার সু-ব্যবস্থা রয়েছে।




আবাসিক ছাত্রদের প্রয়োজনীয় ব্যবহার সামগ্রী

দুই সেট মাদরাসার পোশাক দুইটি লুঙ্গি একটি তোয়ালে, গ্লাস, প্লেট, জগ/মগ একটি ২৬ ইঞ্চি ট্রাংক, একটি তোষক, বিছানার চাদর, শীতবস্ত্র, শিক্ষা সামগ্রী, এছাড়াও একজন মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় সকল জিনিসপত্র। 

সাক্ষাৎ ও যোগাযোগ পদ্ধতিঃ 

  • প্রতিমাসের ১ম ও ৩য় শুক্রবার সকাল ৮ঃ০০-১১ঃ০০ এবং ২ঃ০০-৫ঃ০০টা পর্যন্ত ছাত্রদের সাথে সাক্ষাৎকার করা যাবে।

  • রবি, মঙ্গল, বৃহস্পতিবার আসরের পর ০১৩১০১৪৩৫৫৫/ ০১৩১৯১৮৭৬৩৭/ ০১৩১৯১৮৭৬৩৪/ ০১৩১১৬৯০৪৮৬ নম্বরে ফোন দিয়ে ছাত্রের সাথে ২-৩ মিনিট কথা বলা যাবে। এছাড়া বিশেষ প্রয়োজনে অধ্যক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে অভিভাবকগণ হস্টেল সুপারের ফনের মাধ্যেমে জরুরী বার্তা আদান-প্রদান করতে পারবেন। 




অনাবাসিক সুবিধা 

পরিবহন ব্যবস্থাঃ অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য মাদরাসার নিজস্ব পারিবহন ব্যবস্থা রয়েছে।

ডায়েরী ব্যবহারঃ অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের অবস্থান অভিভাবককে অবহিত করার লক্ষ্যে ডায়েরীতে ছাত্রদের অবস্থা বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়ন করা হয়। এছড়াও আমাদের নিজস্ব সফটওয়ারে কোন শিক্ষার্থীর বিস্তারিত তথ্য জানার সু ব্যবস্থা রয়েছে।

ফোন যোগাযোগঃ জরুরী বিষয় অবহিত করতে তাৎক্ষণিক অথবা অসচেতন অভিভাবককে ছাত্রদের অবস্থা জানাতে মাসে একবার ফোনে যোগাযোগ করা হয়। 



ছুটির নিয়মাবলিঃ

  • আবাসিক শিক্ষার্থী নুন্যতম একমাস অন্তর আবেদন পত্রের মাধ্যমে বাড়ি যাওয়ার ছুটি নিতে পারবে। তবে বিশেষ কারণ, যেমন পারিবারিক দুর্ঘটনা বা মৃত্যু জনিত কারণে ছুটি বিবেচনাধীন থাকবে।

  • অনাবাসিক শিক্ষার্থীর ছুটির প্রয়োজন হলে লিখিত আবেদনের মাধ্যেমে ছুটি নিতে হবে। বাড়িতে থাকা অবস্থায় অসুস্থতা, হঠাৎ সফর বা অন্যকোন প্রয়োজনে ছুটির দরকার হলে ফোনে শ্রেণি শিক্ষককে জানাতে হবে। অতঃপর মাদ্রাসায় উপস্থিত হয়েই শ্রেণি শিক্ষককে জানাতে হবে। অতঃপর মাদ্রাসায় উপস্থিত হয়েই শ্রেণি শিক্ষককের স্বাক্ষর সম্বলিত আবেদন পত্র অফিসে পেশ করতে হবে। 


 




অভিভাবক মন্ডলীর দৃষ্টি আকর্ষণঃ 

প্রতিষ্ঠান ও অভিভাবকের সমন্বিত প্রচেষ্টা ছাড়া কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়। তাই সন্তানের সফলতার জন্য নিম্ন বর্ণিত বিষয়ে সু-নজর দেয়ার জন্য প্রত্যেক অভিভাবকের প্রতি অনুরোধ করা হলো। 


  • মাদ্রাসার নিয়মাবলী আপানার সন্তানের নিরাপত্তা ও উন্নয়ন কল্পে। তাই অভিভাবক সংশ্লিষ্ট প্রতিটি নিয়ম পালনের মাধ্যমে আপনার সন্তানের উন্নয়নে কর্তব্যরত দায়িত্বশীলকে সহযোগীতা করুন।

  • সন্তানের সার্বিক উন্নতির জন্য তাদের লেখা-পড়া পর্যবেক্ষণ করুন এবং প্রয়োজনে ডায়েরীতে লিখে অথবা সরাসরি প্রতিস্টহানে এসে আপনার মন্তব্য ও পরামর্শ অবহিত করুন।

  • সন্তানের যাবতীয় প্রয়োজনীয় সামগ্রী মাদ্রাসায় পোঁছে দিন। যেন তাকে মাদ্রাসার বাইরে যেতে না হয়।

  • যাবতীয় ফি নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ করে শিক্ষার্থীকে দুশ্চিন্তা মুক্ত রাখুন।

  • অতি প্রয়োজনীয় বিষয় ছাড়া ছুটি নেয়ার অভ্যাস ত্যাগ করুন। 



শিক্ষার্থীদের প্রতি বিশেষ নির্দেশনা:

  • আদর্শবান মানুষ, যোগ্য আলেম ও দক্ষ দাঈ হয়ে আল্লাহর সন্তোষ অর্জনের লক্ষ্যে মাদরাসার সকল নিয়ম-কানুন মেনে সর্বদা জ্ঞান অর্জনে সচেষ্ট হতে হবে।

  •  প্রতিদিনের পড়া-লেখা সেদিনেই সম্পন্ন করতে হবে। 

  • প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে স্ব-স্ব সামগ্রী রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে এবং অনুমতি ছাড়া অন্যের জিনিস ব্যবহার করা যাবে না। 

  • মাদরাসায় কোন অপ্রয়োজনীয় জিনিস আনা চলবে না এবং মোবাইল বা কোন বাদ্যযন্ত্র সাথে রাখা যাবে না। কারো কাছে পাওয়া গেলে তা আর ফেরত দেয়া পাবে না।  

  • সকল শিক্ষকের আদেশ মেনে চলতে হবে ।

  • মাদরাসার বড়দের প্রতি সম্মান ও ছোটদের প্রতি স্নেহ প্রদর্শন করতে হবে ।  

  • অনর্থক উঁচু আওয়াজে কথা বলা হৈ-চৈ করা যাবে না ।

  • বেঞ্চ, টেবিল বাথরুম ও দেয়াল ইত্যাদিতে কোন কিছু লেখা নিষিদ্ধ।

  • মাদরাসায় ১০০% উপস্থিত থাকতে হবে।

  • চুল ও হাতের নখ বড় রাখা ও গোড়ালির নীচে কাপড় পরা যাবে না। 

  • শিক্ষক, অভিভাবক ও অন্য কারো স্বাক্ষর নকল করা যাবে না ।  

  • মাদরাসার কোন সম্পদ যেমন চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ, সুইচ, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ইত্যাদি নষ্ট করা যাবে না। কারো দ্বারা কোন কিছু নষ্ট হলে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।  



আমাদের আবেদন

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ

প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোন!

আমরা মুসলিম হিসেবে সন্দেহাতীতভাবে বিশ্বাস করি যে, উভয়কালীন সুখ, শান্তি ও সফলতা লাভের একমাত্র পথ কুরআন ও সহীহ সূন্নাহর পরিপূর্ণ অনুসরণ। কিন্ত আল্লাহর রাসূল (সাঃ) থেকে দূরত্ব বৃদ্ধির সাথে সাথে বিভিন্ন বাতিল ফিরকা ও ফিৎনা বৃদ্ধির পাশাপাশি যোগ্য দ্বীনি আলেমের অপ্রতুলতার কারণে, বাতিল পন্থিদের কুরআন-সুন্নাহর অপব্যাখ্যা ও গলাবাজির কাছে সরলমনা সাধারণ মুসলমানগণ প্রতারিত ও পথভ্রষ্ট হচ্ছে। তাই আজ কুরআন, সুন্নাহ ও বিশুদ্ধ আকীদানয় দক্ষ ও হক্কানী আলেমের বড়ই প্রয়োজন। যারা নির্ভেজাল দ্বীনি জ্ঞানের আলো দিয়ে মানুষকে হিদায়াতের পথ দেখাবেন।

এ প্রয়োজন পূরণে প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আল্লাহর ইচ্ছায় কিছু একনিষ্ঠ মুসলিম ভাইয়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও আপনাদের আন্তরিক সহযোগীতায় ঠাকুরগাঁও জেলায় গড়ে ওঠে কুরআন, সহীহ সূন্নাহ ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় আলোকিত মানুষ তৈরির ব্যতিক্রমধর্মী প্রতিষ্ঠান, মাদরাসাতুল হুদা আল-ইসলামিয়্যাহ আস-সালাফিয়্যাহ। যা দক্ষ নিষ্ঠাবান শিক্ষকমন্ডলী এবং শিক্ষানুরাগী অভিজ্ঞ পরিচালনা কমিটির নিরলস প্রচেষ্টায় অতি অল্প সময়ের ব্যবধানে নূরানী, হিফয, আরবী ভাষা শিক্ষা কোর্সের সাথে কিতাব বিভাগের বালিকা শাখা নবম এবং বালক শাখা দ্বাদশ শ্রেণিতে উন্নিত হয়েছে। বর্তমান শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় এক হাজার। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে মাদরাসাটি সবার কাছে আদর্শবান ও দক্ষ মানুষ তৈরির প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি লাভ করায় ঠাকুরগাঁও সহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো থেকে এত অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি হতে আসে যে, আমাদের আসন স্বল্পতার কারণে অধিকাংশ শিক্ষার্থীকে নিরাশ হয়ে ফিরে যেতে হয়।

হে দ্বীনি ভাই ও বোন!  ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় এ দুনিয়াবী জীবনের সমাপ্তি ঘটবেই ঘটবে। অতঃপর শুরু হবে অনন্তকালের এক ভয়াবহ জীবন। সে জীবনে অবর্ণনীয় ভয়ংকর শাস্তি থেকে বেঁচে, অনাবিল সুখ লাভ করবে যারা বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে পরকালের জন্য সঞ্চয় করবে। আল্লাহ বলেন: ‘‘তোমরা ততক্ষণ পুণ্য লাভ করতে পারবে না যতক্ষণ না তোমাদের প্রিয় বস্তু আল্লাহর পথে ব্যয় করবে’’ (সূরা আল ইমরান: ৯২)। শুধু তাই নয় বরং প্রত্যেকের দান-সদকা হাশরের মাঠে অসহনীয় রোদের তাপ থেকে বাঁচার ছায়া হবে। রাসূল (সাঃ) বলেছেন: ‘‘কিয়ামাতের দিন মানুষের বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত প্রত্যেক ব্যক্তি তার সদকার ছায়াতলে অবস্থান করবে’’- (ইবনে হিব্বান ও হাকিম)। আমরা আল্লাহর জন্য যা ব্যয় করি, তাকে তিনি বিশেষ দয়ায় বহুগুণে বৃদ্ধি করবেন, অত:পর বিনিময়ে মহামূল্যবাণ জান্নাত দিবেন। আল্লাহ বলেন: ‘‘নিশ্চয়ই দানশীল পুরুষ ও নারীগণ এবং যারা আল্লাহকে উত্তম ঋণ দান করে তাদের দেয়া হবে বহুগুণ বেশি এবং তাদের জন্য রয়েছে সম্মানজনক পুরস্কার’’ (সূরা হাদীদ:১৮)। 

অতএব, সময়ের দাবি পূরণে এ দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের সার্বিক উন্নয়নের মাধ্যমে আর্ন্তজাতিক মানে উন্নিত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, অধিক সংখ্যক দ্বীনি আলেম তৈরির উদ্দেশ্যে অধিক শিক্ষার্থীকে ইল্ম অর্জনের সুযোগ করে দিতে আবাসিক ভবন বৃদ্ধি এবং ইয়াতীম ও নিঃস্বদের ফ্রি/হাফ-ফ্রিতে পড়ালেখার পথ সুগম করার মাধ্যমে উভয়কালীন শান্তি ও সফলতা অর্জনের লক্ষ্যে আপনার উশর, যাকাত, ফিৎরা, কুরবানীর চামড়ার টাকা ও সাধারণ দান মাদরাসায় দিয়ে সদকায়ে জারিয়ার অশেষ নেকী হাসিল করার আবেদন রইল।


আপনার আর্থিক সহযোগিতা প্রেরণ ঠিকানা:

‘‘মাদরাসাতুল হুদা আল-ইসলামিয়্যাহ আস-সালাফিয়্যাহ’’

সঞ্চয়ী হিসাব নং ২০৫০১৯৪০২০০৬৬৮৭১০, ইসলামি ব্যাংক, ঠাকুরগাঁও।

সঞ্চয়ী হিসাব নং ২০৫০৬৬৬০২০০০২৭৬০২, ইসলামি ব্যাংক, রোড শাখা, ঠাকুরগাঁও।   

বিকাশ পার্সোনাল:

০১৭২৮৩৭৮২০৯

০১৭৩৭২৬২৮৪১    


ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাঃ

অত্র প্রতিষ্ঠানটি দেশের উত্তরবঙ্গের ঠাকুরগাঁও জেলার ঠাকুরগাঁও বালিয়াডাঙ্গী হাইরোড সংলগ্ন আব্দুল্লাহপুরে অবস্থিত। উত্তরবঙ্গে কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর আলোকে কোন দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় সালাফী মানহাজের সন্তানরাও সঠিক আক্বীদা ও দ্বীনি জ্ঞান অর্জনে বঞ্চিত হয়ে বাতিল আক্বীদায় প্রভাবিত হওয়ায় অত্র এলাকার কিছু ধর্মপ্রাণ মুসলমানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আল্লাহর রহমতে ২০০২ সালে এই প্রতিষ্ঠানের ভিত্তি প্রস্থর করা হয়। কিন্তু দক্ষ পরিচালনা, আর্থিক অনটনের কারণে ২০০৬ সাল পর্যন্ত মাদরাসা উন্নয়ে মূলক কোন কার্যক্রম পরিলক্ষিত হয়নি। অত:পর ২০০৭ সালের দিকে বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলে হাদীস এর সেক্রেটারী জেনারেল ড. মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ খান মাদরাসার সাথে সংশ্লিষ্ট হন এবং প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করলে তার সুচিন্তিত মতামত ও জ্ঞানগর্ভ দিক-নির্দেশনার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সার্বিক উন্নয়নের গতি সঞ্চারিত হয়। যার ফলশ্রুতিতে বর্তমানে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে। কিন্তু আর্থিক অনটনের কারণে প্রয়োজনুসারে যথার্থ আবাসন ও শিক্ষা উপকরণ না থাকায় কাঙ্খিত ফলাফল অর্জন সম্ভব হচ্ছে না। তাই উক্ত প্রয়োজন পূরণ করে সুষ্ঠ পাঠদান ও আবাসন প্রতিষ্ঠার জন্য যা প্রয়োজন তা নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ

১। স্বতন্ত্র আবাসিক বালিকা শাখা প্রতিষ্ঠা।

২। মাদরাসা মাসজিদ প্রতিষ্ঠা।

৩। এতিম ও অতি দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ব্যয়ভার পরিচালনায় মাসিক অনুদান।


১। স্বতন্ত্র বালিকা শাখা প্রতিষ্ঠাঃ বর্তমানে বালক শাখার এক কর্ণারে বালিকা শাখা পরিচালিত হচ্ছে। জায়গা অতি সংকীর্ণ হওয়ায় আগামী বছর শ্রেণি বৃদ্ধি করার কোন সুযোগ নেই। এছাড়াও উত্তরবঙ্গে সহীহ আক্বীদার কোন আবাসিক বালিকা প্রতিষ্ঠান না থাকায় মেয়েরা বিশুদ্ধ আক্বীদা ও দ্বীনি শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যদিও বিশুদ্ধ আক্বীদার পরিবার ও সমাজ বিনির্মাণে নারীর ভূমিকা অপরিসীম। তাই ২ বছর পূর্বেই মাদরাসা কমিটি স্বতন্ত্র আবাসিক বালিকা শাখা প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। কিন্তু অর্থাভাবে এখনো তা বাস্তবায়ন সম্ভবপর হয়নি।

২। মাদরাসা মাসজিদ প্রতিষ্ঠাঃ প্রতিষ্ঠানের সূচনালগ্নে এক মুসলিম ভাইয়ের আর্থিক অনুদান ১৫০ জন মুসল্লীর সলাত আদায়ের জন্য একটি মাসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়। অত:পর ছাত্র সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে প্রথমবার বাঁশ টিন অত:পর এ্যাংগেল ও টিনের চালা তৈরি করে প্রায় আটশত জন মানুষ প্রচন্ড শীত ও গরমে অতি কষ্টে সলাত আদায় করেন। আল্লাহ চাহে আগামী বছর শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে এই কষ্টকর জায়গাতে সলাত আদায় এর জায়গা সংকুলান হবে না। তাই ছাত্র সংখ্যা ক্রমবর্ধমান ও প্রতিষ্ঠানে একটি বড় ও বহুতল বিশিষ্ট মাসজিদের খুবই প্রয়োজন।

৩। এতিম ও অতি দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাসিক অনুদান ব্যবস্থাঃ এ দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ শিক্ষার্থী অতি দরিদ্র হওয়ায় তাদের দ্বারা বোডিং ফি প্রদানও অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে। এমতাবস্থায় এ উর্ধগতির বাজারে খাদ্য, প্রয়োজনীয় সামগ্রী, শিক্ষক ও কর্মচারীর বেতন ভাতা প্রদান প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এ বৃহৎ অঙ্কের দরিদ্র শিক্ষার্থীদের দ্বীনি শিক্ষার পথকে সুগম করার লক্ষে মাসিক অনুদানের প্রয়োজন।

অতএবঃ উপরোক্ত প্রয়োজন  পূরণে সাধ্যনুযায়ী সহযোগীতা দিয়ে এ দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের গতিকে ত্বরান্বিত করতে প্রত্যেক সামর্থ্যবান,সুরীদ মুসলমানের নিকট আমাদের আকুল আবেদন।