শাইখ মোঃ আসাদুল্লাহ খান গালিব - অধ্যক্ষ
সকল প্রশংসা মহা মহিম আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য, সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক অতুলনীয় মহা মানব মুহাম্মাদ (সা:) এর উপর।
ইসলাম এক চিরন্তন, কল্যাণকর, বাস্তব সম্মত ও শান্তির ধর্ম। যেখানে আছে জীবন চলার পথে সকল সমস্যার যুক্তি ভিত্তিক সুষ্ঠ সমাধান এবং সার্বিক কল্যাণের সর্বোত্তম পথ নির্দেশিকা। যার ফলে রাসূল (সা:) জাহেলিয়্যাতের বর্বর মানুষদের অল্প দিনের ব্যবধানে আমুল পরিবর্তন সাধন ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করে বিশ্ব জুড়ে খ্যাতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন । অত:পর কেউ আংশিক আবার কেউ সম্পূর্ণরুপে ইসলাম থেকে দূরে সরে যাওয়ায় অমানবিকতা ও চরিত্রহীনতা দিক থেকে হিংস্র হায়েনায় সদৃশ হওয়ায়, আমাদের জীবন যাত্রা দুর্বীষসহ হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত লাঞ্চিত ও নির্যাতিত মানুষের আর্তনাদে বাতাস ভারী ও দূষিত হয়ে উঠেছে। এ অবস্থ থেকে উত্তরণের জন্য পরকাল ভুলে গিয়ে শুধু পার্থিব উন্নয়নের পথ অবলম্বন করায় আমরা আরো বেশি অশান্তির গহব্বরে তলিয়ে যাচ্ছি। শান্তি যেন স্বপ্নে পরিণত হয়েছে। সুতরাং অর্থনৈতিক শোষন, রাজনৈতিক নীপিড়ন, চরিত্রহীনতা, দূর্নীতি, মাজহাবী সংর্কীণতা ও পারস্পারিক সংঘাতপূর্ণ সমাজের অশান্তি দূর করে শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র পথ, কুরআন ও সহীহ সুন্নাহর আলোকে মানুষের আক্বীদাহ, আমল ও চরিত্র গঠন এবং পরকালীন জবাবদিহীতার মানষিকতা তৈরি করা। এ মহান লক্ষ্য সামনে রেখে একঝাঁক দক্ষ, অভিজ্ঞ ও আদর্শবান মানুষ তৈরির লক্ষ্যে, ইসলাম ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় ব্যতিক্রম ধর্মী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘‘মাদরাসাতুল হুদা আল-ইসলামিয়্যাহ আস-সালাফিয়্যাহ’’ ২০০২খ্রিঃ থেকে ইসলামের মশাল হাতে নিয়ে পদচারনা শুরু করে। যেখানে কুরআন, সহীহ সুন্নাহ, বিশুদ্ধ আক্বীদাহ, বাংলা, ইংরেজী ও গণিত ইত্যাদির সমন্বিত পাঠ্যসূচীর আলোকে অভিজ্ঞ শিক্ষক মন্ডলীর দ্বারা পাঠদান করা হয়। এছাড়াও প্রতিবছর প্রতিষ্ঠানে নতুন নতুন দিক সংযোজন করা হচ্ছে। যেমন: এডুমেন, প্রজেক্টর, আরবি ভাষা শিক্ষা কোর্স ও ওয়েব সাইট ইত্যাদি। যা মাদরাসার শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরো উন্নত এবং পাঠদান পদ্ধতিকে সহজ ও আকর্ষণীয় করছে। সুনিপুণ পরিচালনা এবং যুগোপযোগী ইসলামি শিক্ষার মাধ্যমে গড়ে উঠা ছাত্রদের যোগ্যতা ও চারিত্রিক গুণাবলীর ফলে ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠানের সুনাম ও সুখ্যাতি ঠাকুরগাঁও এবং পার্শবর্তী জেলাগুলোতে ছড়িয়ে পরায় অতি অল্প সময়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা এতই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, আসন সংখ্যা সীমিত হওয়ায় আগত ছাত্রদের অধিকাংশই ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে না। এ সফলতার জন্য আল্লাহর শোকর আদায় করছি। যে সমস্ত শিক্ষক, সদস্য, দাতা, শুভাকাঙ্খী ও কর্মচারীগণের আন্তরিক সেবা ও সহযোগীতায় প্রতিষ্ঠানটি এ পর্যায়ে উপনীত হয়েছে তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এবং আল্লাহর কাছে তাদের উভয়কালীন কামিয়াবী কামনা করছি। পরিশেষে, আলোকিত মানুষ তৈরির এ ব্যতিক্রম ধর্মী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেন আরো অধিক সংখ্যক শিক্ষার্থী দ্বীনি জ্ঞান অর্জন করতে পারে তাই এর উন্নয়ন কল্পে দু’আ, মেধা, শ্রম ও সম্পদ দিয়ে সহযোগীতার জন্য সকল মুসলিম ভাই-বোনকে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দান করুন এবং দ্বীনের পথে এ সামান্য প্রচেষ্ঠাকে কবুল করুন। (আমীন)
মোঃ আসাদুল্লাহ খান গালিব ১৯৭৯ সালের ১লা জানুয়ারী মোতাবেক ১৩৯৯ হিজরীর ১ই সফর সোমবার ঠাকুরগাঁও জেলার সদর থানার রহিমানপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। মোঃ আসাদুল্লাহ খান গালিব নিজ গ্রামের রহিমানপুর ইউ আই আলিম মাদরাসায় শিক্ষা জীবন শুরু করেন। ভালোভাবে আরবী শিক্ষার উদ্দেশ্যে মাদরাসা মুহাম্মাদীয়া আরাবিয়া, যাত্রাবাড়ি ঢাকায় মুতাওয়াস সেতা সানী বৎসরে ভর্তি হয়ে কওমী জীবনে পদার্পণ করেন। ২০০২ সালে কৃতিত্বের সাথে দাওরা হাদীস সম্পূর্ণ করে আরো উচ্চ শিক্ষার জন্যে স্কলারশিপ পেয়ে মদীনাহ ইসলামী-২০০৩ বিশ্ববিদ্যালয়ে গমন করেন। বিশ^বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের পাশাপাশি মাসজিদে নববীতে মাদীনার উল্লেখযোগ্য আলেমদের নিকট থেকে বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করেন। মাদানীহ বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃতিত্বের সাথে হাদীসের উপর লিসান্স সম্পন্ন করে দেশে ফিরে রাজধানী ঢাকার ধলেশ্বর ২০০৯ সালে মাদরাসায় অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। ২০০৯ সালে রিলিজিয়াস এটাচী রাজকীয় সঊদী দূতাবাস, ঢাকা, বাংলাদেশ এর অধীনে সঊদী দূতাবাস এর দাঈ পদমর্যাদা লাভে ধন্য হয়। ১লা জানুয়ারী ২০১০ সালে স্বীয় এলাকার সুনামধন্য প্রতিষ্ঠান মাদরাসাতুল হুদা আল-ইসলামিয়্যাহ আস-সালাফিয়্যায় অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন।